শীতকালে নিজের যত্নের পাশাপাশি ঘরের পোষ্যদেরও অন্যান্য দিনের তুলনায় যত্ন বেড়ে যায়। এইসময়টায় লক্ষ্য করলেই দেখবেন বিড়াল আপনার আশে পাশে থাকে। হয়তো কোলে এসে নয়তো গা ঘেঁষে বসে থাকবে নাহলে ঘুমাবে । কেননা বিড়াল প্রচণ্ড আরামপ্রিয় (আইলসা ) এবং ঊষ্ণস্থানে থাকতে পছন্দ করে । আবার বিড়ালের শরীরে লোম বেশি থাকলেও ওদের শীত বেশি লাগে। তাই শীতকালে বিড়ালদের রোদে গিয়ে রৌদ্রস্নান নিতে দেখা যায়। মা বিড়ালরাও বাচ্চাদের নিয়ে ঘরের উষ্ণতম স্থানগুলোতে রাখে।
শীত বাড়তে থাকলে বিড়ালরা অনেকসময় অসুস্থ্ থাকে বা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগে। যার কারণে ওদের দরকার বিশেষ যত্ন-
🛑১. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রৌদ্রস্নান :-
বিড়ালদের রৌদে বসে থাকলে সেখান থেকে ওকে সরাবেন না। বরং জানালা দিয়ে রৌদ্র আসলে পর্দা সরিয়ে উন্মুক্ত করে দিন এবং বিড়ালকে ওইখানে নিয়ে আসুন।
🛑২. ঘুমানোর জায়গা:-
স্বাভাবিক ভাবেই শীত আসলে বিড়ালরা ঘুমাবে প্রচুর। তাই খেয়াল রাখবেন ঠান্ডা ফ্লোরে যেনো না ঘুমায়। চেষ্টা করবেন ঘরে পাপোশ রাখলে সেখানে যেনো ঘুমায়। আজকাল বাজারে ক্যাট বেড কিনতে পাওয়া যায় সেটা ওদের জন্য কিনতে পারেন। DIY করে ওদের জন্য উষ্ণ বিছানাও বানাতে পারেন যেমন – পুরোনো কম্বল থাকলে সেটা কেটে ছোট করে ওদের জন্য বিছানা বানাতে পারেন।
🛑৩. বিড়ালের খাবার:-
চেষ্টা করবেন কুসুম গরম খাবার দিতে। আর খেয়াল রাখবেন ওরা খাওয়াদাওয়া ঠিক মতো করছে কি না। না করলে ফোর্সফিড করান। এবং সরাসরি রেফ্রিজারেটরে রাখা খাবারটা দিবেন না। চেষ্টা করবেন খাওয়ার কিছুক্ষন আগে ফ্রিজ থেকে বের করে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এনে তারপর তা খাওয়ানোর।
🛑৪. বিড়ালের পোশাক:-
অনেকের বিড়াল ছোটকাল থেকেই কাপড় পড়তে পছন্দ করে। তারা শীতে ওদের জন্য উষ্ণ কাপড় বানাতে পারেন। বিড়াল স্বাচ্ছদ্য বোধ করলেই সেটা করবেন জোর করার দরকার নেই।
🛑৫. গোসল/ grooming :-
শীতে বিড়ালদের গোসল দেওয়ার দরকার নেই । এক কথায় না । যদি বেশি দরকার পরে তাহলে মুছে দিন। উকুন হলে আঁচড়িয়ে দিন নয়তো উকুন নাশক স্প্রে দিন এবং কোনো কারণে শরীর ভিজলে লোম শুখানোর জন্য hair dryer ব্যাবহার করুন।
🛑৬. ঘরের তাপমাত্রা:-
বিছানা দেওয়ার পরও বিড়াল সেখানে না সুলে আপনার সাথে এসে ঘুমাতে চাইলে রুমের ফ্যান কমিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন।
অনেকে ঠান্ডায়ও রুমে ফ্যান বাড়িয়ে রাখে কিন্তু ঘরে বিড়াল থাকলে সেদিকে একটু সাবধান থাকবেন।
🛑৭. খেলাধুলা: –
শীতকালে ওদের খেলাধুলা কমে যায় যার জন্য খুব চুপচাপ হয়ে যায়। তাই ওদের সাথে খেলুন। বাজারে টয় পাওয়া যায় বিড়ালের ,সেগুলো কিনে এনে ওদের সাথে খেলতে পারবেন।
🛑৮. নিরাপত্তা:-
শীতকালে ওদের ঘরে রাখার চেষ্টা করবেন। বাইরের যেতে থাকলে বাইরে থেকে ঠান্ডা লাগিয়ে আসতে পারে। নয়তো নোংরা হয়ে ফিরলে শীতের মধ্যে গোসল দেওয়া লাগে যেটা রিস্ক। তাই বাসা ক্যাটপ্রুফ করুন ।
🛑৯. বিশেষ ব্যবস্থা:-
শীত আসার আগেই ওদের চেষ্টা করবেন ভ্যাকসিন দিয়ে দেওয়ার। নিকটস্থ পশু হাসপাতালে গিয়ে ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন দিয়ে আনুন। কারণ অনেক সময় এত যত্ন নেওয়ার পরও বিড়ালের ফ্লু হয়ে যায় আর বিশেষ করে যাদের বিড়াল জন্মগতভাবেই অসুস্থ বা ঠান্ডায় ভুগে তাদের প্রথম কাজই হওয়া উচিত ভ্যাকসিন দিয়ে নেওয়া।
বিড়ালের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রোগ ফ্লু । সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হলে বিড়াল মারাও যেতে পারে। অনেক বেশি সাবধান থাকতে হবে।